বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাংলাদেশের (Bangladesh) কাছে এমন এক শর্ত পেশ করল বিশ্বব্যাঙ্ক (World Bank)। যাতে সে দেশের সরকার থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ অবদি চটে গিয়েছে। উল্লেখ্য, বিশ্ব ব্যাঙ্কের তরফ থেকে বাংলাদেশকে ঋণের বদলে রোহিঙ্গাদের (Rohingya) নাগরিকত্ব প্রদান করার শর্ত দেওয়া হয়েছে। আর এই নিয়ে চটে গিয়েছে ঢাকা।
বর্তমানে রোহিঙ্গা সমস্যা চরমে উঠেছে গোটা বিশ্বে। বিভিন্ন দেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা অবৈধ ভাবে প্রবেশ করে পাকাপাকি ভাবে বসবাস শুরু করে দিয়েছে। দুই বছর আগে মায়ানমারের রাখাইন অঞ্চলে মায়নমার সেনার অত্যাচারে দেশ ছেড়ে পালাতে শুরু করে রোহিঙ্গারা। বাংলাদেশ, ভারত সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গিয়ে আশ্রয় নেয় তাঁরা। আর সেই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে বাংলাদেশে কক্সবাজার অঞ্চলে গড়ে উঠেছে বিশ্বের সবথেকে বড় শরণার্থী শিবির।
একদিকে এই কাজের জন্য বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন মুসলিম দেশ এবং আন্তর্জাতিক মহলের প্রশংসা পেয়েছে। অন্যদিকে, দেশে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাওয়ায় চাপ সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশের সরকারের উপর। এমনকি রোহিঙ্গারা যেই এলাকায় গিয়ে বসবাস করছে, সেখানকার স্থানীয়রাও এখন রোহিঙ্গাদের সহ্য করতে পারছে না। বিভিন্ন মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরে জনসংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে বেড়েছে অপরাধের সংখ্যাও।
বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ, লুঠপাট সহ জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে ১ লক্ষের উপর রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকার। আর এবার বাংলাদেশকে ঋণের বদলে সেই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার শর্ত দিয়েছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। যা কিছুতেই মানতে নারাজ ঢাকা।
বাংলাদেশ এটা ভালোমতোই বুঝে গিয়েছে যে, বিশ্ব ব্যাঙ্কের এই শর্ত মেনে ঋণ নিলে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের চিরকালের জন্য দেশের রেখে দিতে হবে। আর সেই কারণেই বিশ্ব ব্যাঙ্কের এই প্রস্তাব মানবে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ। প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক বিশ্বব্যাঙ্কের এই প্রস্তাব যাতে গৃহীত না হয়, সেই জন্য অর্থনৈতিক বিভাগ এবং অন্যান্য বিভাগের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছে।
প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, সম্প্রতি বিশ্বব্যাঙ্ক বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিভাগের কাছে তাঁদের রিফিউজি পলিসি রিভিউ ফ্রেমওয়ার্কের মতামতের জন্য পাঠিয়েছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে বাংলাদেশ কোনও উত্তর না দিলে ধরে নেওয়া হবে যে, তাঁরা এই প্রস্তাবে সহমত পোষণ করেছে। আর এই কারণে বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক এবং অর্থনৈতিক বিভাগ এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে বসতে চলেছে।