বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে অনেকেই বিভিন্ন নিত্যনতুন চাষের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন। যেগুলির মাধ্যমে হচ্ছে মোটা উপার্জনও। এমতাবস্থায়, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা আপনাদের কাছে এমন একটি চাষের প্রসঙ্গে জানাবো যেটি শুরু করে আপনি রীতিমতো লাখপতি হয়ে যেতে পারেন। মূলত, আজ আমরা কালো হলুদ (Black Turmeric) চাষের প্রসঙ্গটি উপস্থাপিত করব।
কালো হলুদ হল একটি ঔষধি গাছ। স্বাভাবিকভাবেই এটি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এই হলুদ জ্বর, নিউমোনিয়া, লিউকোডার্মা, কাশি, মাইগ্রেন এবং হাঁপানির ওষুধ হিসেবে কাজ করে। এর পাশাপাশি এই হলুদ বিভিন্ন প্রসাধনী সামগ্রীতেও ব্যবহার করা হয়। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, সাধারণ হলুদের তুলনায় কালো হলুদ চাষ যথেষ্ট লাভজনকও বটে।
কালো হলুদ: কালো হলুদ হল হলুদের একটি ভিন্ন প্রজাতি। এই হলুদের গাছের উচ্চতা ৩০ থেকে ৬০ সেন্টিমিটারের মধ্যেই থাকে। অর্থাৎ, গাছগুলি খুব একটা বড় হয়না। পাশাপাশি, এই হলুদ গাছ প্রধানত মধ্য ভারত এবং দক্ষিণ ভারতে বেশি দেখা যায়। উল্লেখ্য যে, কালো হলুদের বিজ্ঞানসম্মত নাম হল Curcuma caesia।
কালো হলুদের চাষ: কালো হলুদ চাষের জন্য স্বাভাবিক উর্বর জমিতে কন্দ বা চারা রোপণ করা হয়। এরপরে, নির্দিষ্ট সময় অন্তর জমি পরিষ্কার করতে হয়। কালো হলুদ গাছগুলি কন্দ রোপণের প্রায় ২৫০ দিন পরে ফলনের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। ফসল প্রস্তুত হওয়ার পরে, কন্দ বের করে পরিষ্কার করা হয়। এরপর কালো হলুদের গুঁড়ো ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। সমস্ত প্রক্রিয়া শেষে সেগুলি বিক্রির জন্য বাজারে পাঠানো হয়।
কালো হলুদ চাষের জন্য কি প্রয়োজন: কালো হলুদ চাষের সময়ে লক্ষ্য রাখতে হবে যে, জমিতে যেন জল না জমে যায়। মূলত, এই চাষে জলের খুব একটা প্রয়োজন হয়না। তাই, প্রয়োজন অনুযায়ী সেচের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। পাশাপাশি, যেহেতু কালো হলুদ ওষুধ হিসেবেও ব্যবহার করা হয় তাই এই চাষে কীটনাশক ব্যবহার না করাই ভালো। জুন মাসকে এই চাষের জন্য উপযুক্ত বলে মনে করা হয়।
এই চাষ করলে লাভবান হবেন: বর্তমান সময়ে বাজারে কালো হলুদের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এর দু’টি বড় কারণও রয়েছে। প্রথমত, খুব কমজনই এই চাষটি করেন। দ্বিতীয়ত, কালো হলুদ ঔষধি গুণে পরিপূর্ণ থাকে। তাই, অনেকেই এটির উপকারিতার কারণে কালো হলুদ ব্যবহার করেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই চাষের মাধ্যমে এক একর জমি থেকে প্রায় ১২ থেকে ১৫ কুইন্টাল কালো হলুদ পাওয়া যায়। এমতাবস্থায়, এই হলুদ প্রতি কেজিতে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। এক্ষেত্রে, খুব সহজেই এই চাষের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করতে পারেন কৃষকেরা।