ডিভিসির ভেতরেও সিন্ডিকেট রাজ? ১০ লক্ষ ‘তোলা’ না দিলে কাজ বন্ধ! প্রমাণ সহ সব ‘ফাঁস’ করলেন ব্যবসায়ী

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিরোধীরা বলে তৃণমূল (Trinamool Congress) আর তোলাবাজি নাকি ‘সমার্থক’ শব্দ। শুধুই কি দাবি? জোড়াফুল জমানায় বিগত বহু বছর ধরে এই তোলাবাজির ঘটনা সামনে এসেছে বারে বারে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অবৈধ কয়লার সিন্ডিকেট রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে বহুবার। এবার ডিভিসির ছাই উত্তোলনের ক্ষেত্রেও এই সিন্ডিকেটের ‘দাপাদাপি’র অভিযোগ। শাসকদলের বিরুদ্ধে বড়সড় অভিযোগ তুলে সরব মহাকাল মার্চেন্টের মালিক জিতেন চ্যাটার্জি।

দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) দুর্গাপুর স্টিল থার্মাল পাওয়ার স্টেশন থেকে ছাই তোলার অনুমতি পেয়েছে জিতেনবাবু ও তার সংস্থা। ডিভিসির সাথে তার চুক্তিও হয়ে গেছে। তবে সমস্ত চুক্তি মেনে তিনি যখন তিনি সেই কাজে নামতে যান তখন তাকে বাধা একদল ‘তোলাবাজ’। অভিযোগ, মেশিন-পত্র নিয়ে কাজ করতে গেলে ডিএসটিপিএস অণ্ডাল গেটে ডিএসটিপিএস টিপার মালিক সমিতির কিছু ‘সশস্ত্র’ দালাল তোলাবাজের দল তাদের মেশিন আটকে দেয়।

যেই কাজের জন্য তারা ইতিমধ্যেই ডিভিসির থেকে সমস্ত রকম অনুমতি নিয়েছেন সেই কাজের জন্যই নাকি জিতেনবাবুর কাছে দশ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়। সব কিছুর প্রমাণ সহ অভিযোগ তুলেছেন জিতেনবাবু। শুধুই যে কাজ করতে বাধা দেওয়া হয় তেমনটা না। অভিযোগ, অস্ত্র, লোহার রড নিয়ে হুমকি, গালাগালি করা থেকে শুরু করে শারীরিকভাবে লাঞ্ছনাও করা হয় তাকে।

mahakal 4

ব্যবসায়ীর প্রশ্ন, ‘প্রত্যেক বছর অণ্ডাল ডিভিসির এই ছাই উত্তোলনের ক্ষেত্রে দেড়শো কোটি টাকার বাজেট। সেখানে আমরা সম্পূর্ণ নিজেদের খরচায় সেটা করার উদ্যোগ নিয়েছি। সেক্ষেত্রে প্রত্যেক বছর ডিভিসির দেড়শো কোটি টাকার লাভ হচ্ছে। যা গিয়ে সার্বিকভাবে সাধারণ মানুষ যারা বিদ্যুতের বিল দেয় তারাই এর সুবিধা পাবেন। ব্যবসা এবং সামাজিক কাজ দুটোই একসাথে করছিলাম আমরা। এখানের তৃণমূলের নেতারা আমাদের সেই কাজে বাধা দিয়েছে।’

mahakal 3

আরও পড়ুন: মোদি-শাহের কড়া শাস্তি চাই! নির্বাচনের মধ্যেই  BJP-র স্টার প্রচারকদের বিরুদ্ধে কমিশনে কংগ্রেস

গোটা ঘটনায় সিন্ডিকেট রাজের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন জিতেনবাবু। এক ভিডিও বার্তায় গোটা ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা দুর্গাপুর অণ্ডালে ডিভিসিতে একটা ওয়ার্ক অর্ডার পেয়েছি দু’লক্ষ টনের পন্ড অ্যাশ উত্তোলন করার। সেক্ষেত্রে যখন আমরা আমাদের মেশিন-পত্র নিয়ে কাজ করতে যাই তখন সমস্ত কিছু পাশ হয়ে যাওয়ার পরও ওখানে একটা ডি এস টি পি এস অন্ডাল সিন্ডিকেট দালাল তোলাবাজের দল আমাদের মেশিন আটকে দেয়। বিনিময়ে দশ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়। কন্ডাকটারির ব্যবসা করতে গেলেও নাকি দশ লক্ষ দিতে হবে।’

mahakal

                                                                                                      Affidavit and details

আরও পড়ুন: ট্যাব কেলেঙ্কারিতে জড়িত শিক্ষা দপ্তরের কেউ? ‘তরুণের স্বপ্ন’ চুরি নিয়ে লালবাজার কী বলছে

ইতিমধ্যেই এই নিয়ে অণ্ডাল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, ‘পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নেবে এই আশা করছি। যদি ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে আগামীদিনে আরও বড় জায়গায় যাব।’ এখানেই শেষ নয়! তার আরও অভিযোগ, ডিভিসি এরিয়ার মধ্যে বিরাট অফিস বানিয়ে রেখেছে ওই ‘দুর্বৃত্তরা’। সরকারি জায়গায় কি করে সিন্ডিকেট অফিস? সেই প্রশ্নও ছুড়ে দিয়েছেন ওই ব্যবসায়ী।


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর