করোনায় হতে পারে মস্তিষ্ক নষ্ট, হ্যালুসিনেশনের আশঙ্কা দাবি লন্ডনের বিজ্ঞানীদের

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ মারণ ভাইরাস করোনা নিয়ে সারা বিশ্ব তোলাপাড়। যত দিন যাচ্ছে ততই আরো বেশি করে স্পষ্ট হচ্ছে যে করোনাভাইরাস (corona virus) মানুষের মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রে বহু রকমের সমস্যা সৃষ্টি করে। এমনটাই দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা।

জানা গিয়েছে, সংক্রমণ গভীরে পৌঁছলে মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে তীব্র প্রদাহ হতে পারে, স্মৃতিনাশের ঝুঁকিও বাড়তে পারে। সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডনের বিজ্ঞানীরা ( দাবি করেছেন, কোভিড সংক্রমণ মৃদু বা মাঝারি হলেও ‘ব্রেন ড্যামেজ’ হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। স্নায়ুর রোগ, স্ট্রোকও হতে পারে রোগীর।

‘ব্রেন’ জার্নালে এই গবেষণার রিপোর্ট সামনে এনেছেন বিজ্ঞানীরা। ৪০ জন কোভিড পজিটিভ রোগীর শারীরিক পরীক্ষা করে গবেষকরা দাবি করেছেন, ওই রোগীদের প্রত্যেকেরই নিউরোলজিক্যাল সিম্পটম দেখা গেছে। কারও ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের রোগ গুরুতর। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ৫৫ বছরের এক মহিলা কোভিড সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

coronavirus 4972480 1280

জ্বর, সর্দি-কাশির মতো উপসর্গ ছিল। সংক্রমণ ছিল মাঝারি। চিকিৎসায় সেরে ওঠার পরে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ঠিক সপ্তাহ দুয়েক পরেই নানারকম স্নায়বিক রোগের উপসর্গ দেখা দেয় ওই মহিলার। হ্যালুসিনেশন হতে থাকে তাঁর। অথচ করোনার আগে তাঁর কোনওরকম মানসিক রোগ বা মস্তিষ্কের রোগ ছিল না।

গবেষকদের বক্তব্য, ১৮ বছর থেকে ৮৫ বছর বয়সী কোভিড রোগীদের পরীক্ষা করে দেখা গেছে, অনেকেই সাইকোসিস, স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন। এমনকি অ্যাকিউট ডিসেমিনেটেড এনসেফ্যালোমায়েলিটিস (Adem) রোগে আক্রান্ত হতেও দেখা গেছে অনেককে। এটি মস্তিষ্কের এক জটিল রোগ যেখানে তীব্র প্রদাহ হয়।

ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডনের নিউরোলজি বিভাগের গবেষক মাইকেল জান্দি বলছেন, করোনা সংক্রমণের সঙ্গেই মস্তিষ্ক ও স্নায়ুর এইসব জটিল রোগের সম্পর্ক রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ এর আগে অন্য কোনও ভাইরাসের সংক্রমণে এত জটিল রোগ হতে দেখা যায়নি।

‘অ্যালঝাইমার্স ডিজিজ’ সায়েন্স জার্নালে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল, যেখানে নিউরোলজিস্টরা বলেছিলেন, কোভিড সংক্রমণে কীভাবে মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারে। ভাইরাস সংক্রামিত রোগীদের এমআরআই করে সেই তথ্য সামনে এনেছিলেন বিজ্ঞানীরা। দীর্ঘদিন কোভিড রোগীদের পর্যবেক্ষণে রেখে তাদের শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ্য করেই এমন দাবি করা হয়েছিল।

2 48

বিজ্ঞানীরা বলেছিলেন, ভাইরাল প্রোটিন বা অ্যান্টিজেন শরীরে ঢুকে সাইটোকাইন প্রোটিনের ক্ষরণ অনেকটাই বাড়িয়ে দিচ্ছে। এই সাইটোকাইন প্রোটিনের কাজ হল বাইরে থেকে কোনও সংক্রামক ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা প্যাথোজেন ঢুকলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের কোষে সেই বিপদ সঙ্কেত পৌঁছে দেওয়া।


সম্পর্কিত খবর