বাংলাহান্ট ডেস্কঃ জাপান (Japan) এবং ভারতের (India) বন্ধুত্ব বহু দিনের। করোনা ভাইরাসের (COVID-19) প্রতিরোধ করতে জাপান সবসময় ভারতের পাশে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে জাপান যেভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে, তা ভারতেরও কাজে লাগতে পারে। জাপান প্রথম থেকেই চীনের করোনা ভাইরাসের বিষয়ে বুঝতে পেরেছিল। তাই তারা আগে থাকতেই এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে মোকাবিলা করার ব্যবস্থা করেছিল।
কয়েকবছর আগে ২০০২-২০০৩ সালে যখন সার্স ভাইরাসের উৎপত্তি হয়েছিল, তখন জাপানে তাঁর ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল। তখন জাপান তাঁদের আইনে বিভিন্ন বদল আনতে বাধ্য হয়। চীন প্রায় কয়েকবছর অন্তর অন্তর একটা করে মহামারি বিশ্বে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এই বিষয়টা জাপান আগেই লক্ষ্য করেছিল। তাই যখন করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি হতে শুরু করে, তখন থেকেই জাপান সেখানে এই রোগের জন্য ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছিল।
চীন প্রথমে বলেছিল এই ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায় না। কিন্তু এই ভাইরাসের দূরদর্শিতা বিবেচনা করে জাপান সরকার তাঁদের ওখানে ১৫০ টি করোনার টেস্ট সেন্টার বানানো শুরু করে দিয়েছিল। কিন্তু সেভাবে দেখতে গেলে ভারতে এখনও অবধি সরকারী বেসরকারি মিলিয়ে মোট ১৫০-২০০ টি টেস্ট সেন্টার বানানো হয়েছে। অপরদিকে জাপানে ১ জন ব্যক্তিও করোনা আক্রান্ত হওয়ার আগেই ১০০ টি টেস্ট সেন্টার বানানো হয়ে গেছিল।
করোনা ভাইরাসের ফলে যখন জাপানে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছিল, তখন জাপান সরকার জাপানের নাগরিকদের কোয়ারেন্টিন করতে থাকে। তবে সেখানেও মানুষজন এই কোয়ারেন্টিন নিয়ম মানতে চাইছিল না। তাই তখন জাপান সরকার সমস্ত ব্যক্তির ফোনে একটি অ্যাপ ইনস্টল করিয়ে দেয় এবং বলা হয় ওই অ্যাপে করোনা ভাইরাস বিষয়ক বিভিন্ন বিষয় জানা যাবে। কিন্তু যেসকল ব্যক্তি কোয়ারেন্টিন না মেনে ফোন নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোত তখনই একটা ম্যাসেজ আশেপাশে পুলিশ আধিকারিকদের কাছে চলে যেত। এবং তারা গিয়ে সেই ব্যক্তিকে ঘরে ফিরিয়ে আনত।
এছাড়াও জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রধানমন্ত্রীদের একটি অতিরিক্ত ক্ষমতা থাকে। দেশে যদি কোন মহামারির পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, তখন সরকার যেকোনো মানুষের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে ওই ব্যক্তির যাবতীয় ডিটেলস বের করতে পারে। ওই ব্যক্তিটি কোথায় কোথায় গেছিল, কোথায় কোথায় কার্ড এবং মোবাইল ব্যবহার করেছেন, যাবতীয় সব সরকার জানতে পারবে। এই পদ্ধতির মাধ্যমে কোন ব্যক্তি কোথায় গেছে, তা সব জানতে পারবে সরকার। যার জেরে জাপানে এখন করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এবং খুব শীঘ্রই তারা এই রোগের ভ্যাকসিনও বানিয়ে ফেলবে। সেই কারণে জাপান এখন ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে, এবং ভারতের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।