বাংলাহান্ট ডেস্ক : ‘বাপ কা নাম দীননাথ চৌহান, মা কা নাম সুহাসিনী চৌহান, গাঁও মাণ্ডওয়া’ ডায়লগগুলি মনে পরছে? অমিতাভ বচ্চন অভিনীত নয়ের দশকের সুপারহিট ছবি ‘অগ্নিপথ’-র ডায়লগ। সেই সময় দর্শককুলে ঝড় তুলেছিল এই ছবি। এবার শত্রুর বুকে শঙ্কা আবারও আসছে ‘অগ্নিপথ’। না এবার আর কোনও সিনেমা নয়। ভারতীয় সেনার তিন প্রতিরক্ষা বাহিনীতে নতুন সশস্ত্র বাহিনী নিয়োগের পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্র। যার নাম হবে ‘অগ্নিপথ’। আজ, মঙ্গলবার কেন্দ্রের তরফে ‘অগ্নিপথ’-এর কথা ঘোষণা করেছেন তিন সেনাবাহিনীর প্রধান।
সপ্তাহ দুয়েক আগেই সশস্ত্র বাহিনী নিয়োগের নতুন প্রকল্পের কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দ। তবে তখনও নাম জানা যায়নি নতুন প্রকল্পের। আজ সেই নাম প্রকাশ্যে এল। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ কেন্দ্রের এই অগ্নিপথ প্রকল্প সম্পর্কে বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত।’
জানা যাচ্ছে, ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পে চার বছরের জন্য সেনা জওয়ানদের বাহিনীতে নিয়োগ করা হবে। সাড়ে ১৭ বছর থেকে ২১ বছর বয়সিরা এই প্রকল্পের অধীনে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবেন। মোট ৪৫ হাজার ভারতীয় যোগ দিতে পারবেন এই বাহিনীতে। চার বছরের মধ্যে প্রথম ৬ মাস ব্যায় হবে প্রশিক্ষণ নিতে।
প্রতিরক্ষা বিভাগ জানাচ্ছে, ৪৫ হাজার জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হলেও তার মধ্যে থেকে মাত্র ২৫ শতাংশ জওয়ানকেই বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তখন তাঁদের চাকরির মেয়াদ হবে ১৫ বছর। সে সময়ে তাঁদের মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা বেতন এবং প্রাপ্য ভাতাও দেওয়া হবে। নন-ব়্যাঙ্কি আধিকারিক হিসেবে কাজ করবেন তাঁরা। চাকরির মেয়াদ শেষের পরে মিলবে অবসরকালীন পেনশনও।
বাহিনীতে যাঁদের জায়গা হবে না তাঁদের এককালীন ১১-১২ লক্ষ টাকার প্যাকেজও দেওয়া হবে বলে জানা গেছে, তবে কোনও পেনশন থাকবে না। বাহিনীতে থাকার কোনও সুযোগ-সুবিধাও তাঁরা পাবেন না। তবে এই বিষয় নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্নও। অনেকেই বলছেন, মাত্র ৬ মাসের প্রশিক্ষণে কী ভাবে সশস্ত্র বাহিনী হিসেবে কাজ করা সম্ভব। তাছাড়া ৪৫ হাজার জনের মধ্যে যাঁরা রেগুলার ক্যাডার হিসেবে সুযোগ পাবেন না, তাঁদের বাদ পড়া নিয়েও একাধিক প্রশ্ন উঠতে পারে বলেই মনে করছেন অনেকেই। এই প্রকল্পটি উচ্চস্তরের বিভিন্ন মহলেও যথেষ্ট সমালোচিত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, অগ্নিপথ বাহিনী ভারতীয় সেনাবাহিনীর দেশভক্তি এবং পেশাদারিত্বে প্রভাব ফেলতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।