বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: ভারতীয় ক্রিকেটের আকাশ যখন ম্যাচ গড়াপেটা কেলেঙ্কারির কালো মেঘে ছেয়ে গিয়েছিল, সেই সময় দলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলী। অনেকেই মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে ভারতীয় ক্রিকেটের আকবর মনে করলে সৌরভ গাঙ্গুলীকে মনে করেন ভারতীয় ক্রিকেটার বাবর। গড়াপেটার অন্ধকার অধ্যায় পেরিয়ে তিল তিল করে ভারতীয় ক্রিকেট দল কে গড়ে তুলেছিলেন সৌরভ। নিচের অধিনায়কত্বে সবসময় দলের ভালো চেয়ে গেছেন তিনি কখনও কোনও সাহসী সিদ্ধান্ত যা হয়তো দলের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করবে তা নিতে দ্বিধা করেননি। এই প্রতিবেদনে তার সেই তিনটি সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা করা হলো ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসটা নতুন ভাবে লিখতে সাহায্য করেছিল।
- ভারতীয় দলে দীর্ঘকাল ভালো অলরাউন্ডারের অভাব ছিল। সেই অভাব কাটিয়ে উঠতে সৌরভ এমন একটি সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যা হয়তো সকলে সেই পরিস্থিতিতে নিতে পারতেন না। তিনি নতুন অলরাউন্ডারদের নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার রাস্তায় হাঁটার বদলে রাহুল দ্রাবিড় কে উইকেটরক্ষক বানিয়ে দিয়েছিলেন। সেই সময় একদিনের ক্রিকেটে খুব একটা ভালো ছন্দ ছিলেন না রাহুল দ্রাবিড়। কিন্তু উইকেটরক্ষক হওয়ার দৌলতে তিনি ২০০৩ বিশ্বকাপ এবং ২০০২ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলেছিলেন। সেই দুটি প্রতিযোগিতাতেই ভারত ফাইনাল অবধি গিয়েছিল। ২০০৩ সালে ভারত বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসের সর্বকালের অন্যতম সেরা অস্ট্রেলিয়া দলের কাছে হার মানতে বাধ্য হয়েছিল এবং ২০০২ সালে ভারত এবং শ্রীলঙ্কা যৌথ চ্যাম্পিয়ন হয়।
- নিজের কেরিয়ারের শুরুতে বীরেন্দ্র সেওবাগ একজন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান এবং পার্ট-টাইম স্পিনার হিসেবে ভারতীয় দলে এসেছিলেন। কিন্তু সেই জায়গায় তিনি মানিয়ে নিতে পারছিলেন না। তখন অভিজ্ঞ সৌরভ সেওবাগের ব্যাটিংশৈলী দেখে তাকে ওপেনার হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করার একটি সুযোগ দেয়। ভাগ্যিস। নয়তো হয়তো ভারত টেস্ট ক্রিকেটে তাদের অন্যতম সেরা ওপেনার কে হয়তো কোনদিনও পেত না।
- ২০০১ সালের ইডেন গার্ডেন্সে সেই ঐতিহাসিক অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্টের কথা হয়তো প্রতিটা ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীর মনে উজ্জ্বল হয়ে থাকবে নিজের জীবনের শেষ দিন অবধি। ভিভিএস লক্ষণ এবং রাহুল দ্রাবিড়ের দুর্দান্ত ব্যাটিং এরপর পঞ্চম দিনে অস্ট্রেলিয়া টেস্ট করতে চাইছিল। একবার অস্ট্রেলিয়া তাদের লক্ষ্যে সফল হলে ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ জয়ের আশা ছাড়তে হতো ভারতকে। কিন্তু সৌরভের ব্যতিক্রমী পথে হেটে সচিন টেন্ডুলকারের হাতে বল তুলে দেন। পরপর কয়েকটি ওভারে গিলক্রিস্ট, হেডেন এবং শেন ওয়ার্নের উইকেট নিয়ে সৌরভের সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করেছিলেন সচিন টেন্ডুলকার এবং ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টেস্টটিতে ভারত জয় পেয়েছিল।