ব্যাঙ্ক থেকে ৬৮ কোটি টাকা চুরি করে বিদেশে পালালেন মহিলা, সিন্দুকে ভরে দিলেন কাগজ

বাংলা হান্ট ডেস্ক: অনেকসময় বাস্তবের মাটিতেই এমন কিছু ঘটনা ঘটে যেগুলি রীতিমতো কল্পনাও করা যায়না। বরং, সেগুলির সাথে সিলভার স্ক্রিনে চলা সিনেমার (Cinema) চিত্রনাট্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ইতিমধ্যেই দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সিনেমায় ব্যাঙ্ক থেকে টাকা চুরির ঘটনা আমরা দেখেছি। যেখানে দুঃসাহসিক সব কাজ করে বেড়ান নায়ক-নায়িকারা। তবে, এবার এমন এক ঘটনা সামনে এসেছে যা কার্যত সিনেমাকেও হার মানিয়ে দেবে।

জানা গিয়েছে, এক মহিলা তাঁর সঙ্গীকে নিয়ে সেই ব্যাঙ্কে ছিনতাই করেছেন যেখানে তিনি বহু বছর ধরে কাজ করতেন। শুধু তাই নয়, ব্যাঙ্কের ভল্ট থেকে প্রায় ৬৮ কোটি টাকা চুরি করে তার পরিবর্তে তাঁরা ওই ভল্টে কাগজের টুকরো ভর্তি করে রেখেছিলেন। সর্বোপরি, এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটিয়ে ওই মহিলা প্রাইভেট জেটের সাহায্যে বিদেশে পালিয়ে যান বলেও খবর মিলেছে। যদিও, ওই ঘটনার চার বছর পর অভিযুক্ত মহিলাটিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে রাশিয়ায়।

   

এই প্রসঙ্গে “ডেইলি স্টার”-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ইনেসা ব্র্যান্ডেনবার্গ (Inessa Brandenburg) নামের ওই দুঃসাহসিক মহিলা শুধু ব্যাঙ্কে কাজই করতেন না, বরং তিনি সেই ব্যাঙ্কের অন্যতম মালিকও ছিলেন। পাশাপাশি, চুরির ঘটনায় যুক্ত থাকা তাঁর সঙ্গীটিও ওই ব্যাঙ্কের “বোর্ড অফ ডাইরেক্টরস”-দের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। অর্থাৎ দু’জনেই ব্যাঙ্কের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হওয়ায় এত বড় চুরির ঘটনায় প্রাথমিকভাবে তাদের কেউ সন্দেহ করেন নি।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে, ইনেসা টিউমেনের সাইবেরিয়ান ব্যাঙ্ক ফর রিকনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের ভল্ট থেকে প্রায় ৬৭ কোটি ৪৯ লক্ষ টাকা চুরি করেছিলেন। এদিকে, এই চাঞ্চল্যকর বিষয়টি সামনে আসার আগেই তিনি প্রাইভেট জেটে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। যদিও, এই ঘটনার চার বছর অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পর স্পেন থেকে তিনি ধরা পড়ে যান। এমনকি, তাঁকে রাশিয়ায় ফিরিয়ে আনাও হয়েছে।

এই ঘটনায় ইনেসা একা ছিলেন না: এই ঘটনা তখনই সামনে এসেছিল যখন ব্যাঙ্কে কর্মরত ক্লার্ক ভল্টে টাকার বদলে কাগজের টুকরো দেখতে পান। তারপরেই পুলিশের তদন্তে উঠে আসে সমগ্ৰ বিষয়টি। এমতাবস্থায়, এই ঘটনায় ইনেসা একা যুক্ত ছিলেন না। বরং, তাঁর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের আরেকজন মালিক ও বোর্ড চেয়ারম্যান রোমানয়াত জড়িত ছিলেন। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি, ইনেসার বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়েছে।

পাশাপাশি, তদন্ত মারফত জানা গিয়েছে যে, এই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন রোমানয়াত। শুধু তাই নয়, খুব সহজেই ওই বিপুল সংখ্যক অর্থের নাগাল পেতে তিনিই ইনেসাকে ব্যাঙ্কের নির্দেশক মন্ডলীর ডেপুটি চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত করেছিলেন। এমতাবস্থায়, ইনেসা তাঁর আধিকারিক ক্ষমতার ব্যবহার করে ওই টাকা হাতিয়ে নিতে পেরেছিলেন।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর