বাংলা হান্ট ডেস্কঃ লোকসভা ভোটের মাঝে জ্বলন্ত ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির (SSC Recruitment Scam) রায়দান। ২০১৬ সালের এসএসসির সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। এরপর থেকে এই নিয়ে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। গতকাল সুপ্রিমো কোর্টে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তৃণমূল (TMC) নেত্রী। এবার প্রশ্ন তুললেন, ‘স্কুলে গিয়ে কি বিজেপি, আরএসএসের লোকেরা পড়াবে?’
পূর্ব বর্ধমানের সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে এদিন মমতা বলেন, ‘আমি কারোর নাম না নিয়েই বলছি, তাঁদের ঘরের যদি কেউ হতো…সরকারি টাকায় খাবে, চলবে, নিরাপত্তা নেবে, সব কিছু হজম করবে। এরপর এক কলমের খোঁচায় বলবে সবার চাকরি চলে গেল। আপনার নিজের ছেলেমেয়ের চাকরি চলে গেলে আপনি ভাবতেন না? একবারও ভাবলেন না, আজ যদি কোনও ছেলেমেয়ে আত্মহত্যা করেন তার দায়িত্ব আপনারা নেবেন? আমি সেই জন্য বলছি, চিন্তা করবেন না, আমরা আমাদের সাধ্য মতো লড়াই করব’।
এরপর শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হয়ে সুর চড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, বিগত ৮ বছর ধরে যারা স্কুলে শিক্ষকতা করছেন তাঁদের একটা সামাজিক সম্মান হয়নি? তৃণমূল নেত্রী জিজ্ঞেস করেন, ‘যারা স্কুলে পড়ায় কোথায় যাবে? স্কুলগুলোতে মাস্টার কোথা থেকে আসবে? স্কুলে বাচ্চারা গিয়ে বসে থাকবে, ওখানে বিজেপির লোকেরা গিয়ে পড়াবে? কি আরএসএস পড়াবে?’
আরও পড়ুনঃ ‘মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে…’, SSC-র রায় বেআইনি বলতেই মমতার বিরুদ্ধে মুখ খুললেন আরেক প্রাক্তন জাস্টিস
এরপর নাম না নিয়েই বিজেপির এক নেতাকে নিশানা করেন তৃণমূল নেত্রী। মমতা বলেন, ‘বিজেপিতে গিয়ে দালালি কেন করছিস? প্রচুর টাকা করেছিস বলে ইডি-সিবিআই-এনআইয়ের ভীষণ ভয়! সেদিন পুরুলিয়ার চাকরি কে বিক্রি করেছিল? যদি আমি নামটা বলি? আমি সেটা বলব না। আপনারা খুঁজে নিন। আমার ঈশারাই যথেষ্ট…। সবচেয়ে বড় কুকর্মটা যে করেছে তাঁর নাম বড় গদ্দার। কোর্ট কি রায় দিবি তুই জানলি কী করে? দু’দিন আগে বলে দিলি বোমা ফাটাব!’।
এদিকে পাল্টা দিয়েছেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguly)। তিনি বলেন, ‘আইনি-বেআইনি উনি কিছুই বোঝেন না। মঞ্চের ওপর ভারতনাট্যম নেচে নেচে শুধু সংলাপ বলতে পারেন’। মমতার ‘বিজেপির কথায় রায়’ মন্তব্য প্রসঙ্গেও জিজ্ঞেস করা হয় অভিজিৎকে। জবাবে তমলুকের পদ্ম প্রার্থী বলেন, ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা। একথা যিনি বলেন তিনি ভারতীয় নন। আপনারা খোঁজ নিন ওনার নাগরিকত্ব কোথাকার, উনি কোথাকার নাগরিক’।
বিচারপতি থাকাকালীন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে একাধিকবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উঠে এসেছে। নিয়োগ দুর্নীতিতে কি কখনও তৃণমূল ‘সেনাপতি’র যোগ পেয়েছিলেন? জনপ্রিয় এক সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি এই প্রশ্ন করেন বিজেপি প্রার্থীকে। জবাবে তিনি বলেন, ‘এই সম্বন্ধে আমার কাছে যে রিপোর্টগুলি এসেছিল সেগুলি এতটাই গোপন যে এই বিষয়ে খোলাখুলি আলোচনা করা সম্ভব নয়। তবে শুধু এটুকু বলতে পারি, অনেকেরই নাম এসে গিয়েছে। ধেড়ে ইঁদুর এবং মাথা ধরা পড়বে। একটু অপেক্ষা করুন’।