বাংলা হান্ট ডেস্ক: ১৯৭২ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী (Indira Gandhi) শিলান্যাস করেছিলেন দ্বিতীয় হুগলি সেতুর (Second Hooghly Bridge)। এমতাবস্থায়, ১৯৭৯ সাল নাগাদ এই সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হলেও ১৯৯২ সালে আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন হয় সেতুটির। যেটি পরিচিত বিদ্যাসাগর সেতু নামেও। পাশাপাশি, ভারতের প্রথম এবং সবচেয়ে দীর্ঘ কেবল স্টেইড সেতুর তকমাও রয়েছে বিদ্যাসাগর সেতুর কাছেই।
বর্তমান সময়ে এই সেতুর গুরুত্ব যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, এবার ৩১ বছর বয়সের দ্বিতীয় হুগলি সেতুর স্বাস্থ্যের প্রসঙ্গে উৎকণ্ঠাও তৈরি হয়েছে। শুধু তাই নয়, কয়েকদিন আগেই এই বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডেকেছিলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। ওই বৈঠকে পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের পাশাপাশি পূর্ত সচিব অন্তরা আচার্য সহ সংশ্লিষ্ট দফতরের সিনিয়র ইঞ্জিনিয়াররা উপস্থিত ছিলেন। তারপরেই দুর্গাপুজোর পর রীতিমতো যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এই সেতুর মেরামতের কাজ শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, দ্বিতীয় হুগলি সেতুর সেতুর ডিজাইন তৈরি করেছিল জার্মান কারিগরী সংস্থা শ্লায়েশ বার্জারম্যান পার্টনার (Schlaich Bergermann Partner)। এমতাবস্থায়, সেতুটির মেরামতির পরিকল্পনার ক্ষেত্রে এদেশের ইঞ্জিনিয়ারদের উপর ভরসা করছে না নবান্ন। বরং পুজোর পর জার্মানি থেকে একটি বিশেষজ্ঞ দল কলকাতায় আসবে। তাঁদের তত্ত্বাবধানেই শুরু হবে এই মেরামতির কাজ।
আরও পড়ুন: হয়ে যান সতর্ক! এবার এই কারণে ৪ টি ব্যাঙ্ককে বড় জরিমানা করল RBI, আপনার অ্যাকাউন্ট নেই তো?
পাশাপাশি, পূর্ত দফতর সূত্রে মিলেছে যে, সেতুর মেরামতির জন্য জার্মানি থেকে প্রয়োজনীয় সামগ্রী ইতিমধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে। এছাড়াও, প্রাথমিক ভাবে সেতুটির মেরামতির জন্য খরচ হতে পারে ৫৫ কোটি টাকা। যদিও, খরচের পরিমাণ অনেকটাই বাড়তে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, চলতি বছরেই দ্বিতীয় হুগলি সেতুর রাস্তার সংস্কার করা হয়েছিল। সেতুর উপর রাস্তার অংশ তুলে ফেলে তাতে প্রলেপ দেওয়া হয় ম্যাস্টিক অ্যাস্ফাল্টের। তবে, এই নতুন অ্যাস্ফাল্টের প্রলেপ দেওয়ার আগে ব্রিজের ডেড লোড কমাতে পুরোনো রাস্তার অংশ তুলে ফেলা হয়।
আরও পড়ুন: পেটের দায়ে ভিন রাজ্যে কাজ করতে যাওয়াই হল কাল! মর্মান্তিক পরিণতি বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকের
রয়েছে যাত্রীদের দুর্ভোগের আশঙ্কা: দ্বিতীয় হুগলি সেতুর মেরামতির বিষয়ে যেটি সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জের বিষয় সেটি হল ট্রাফিক ডাইভারসন। এই বিষয়ে নবান্নেরও বড় উদ্বেগ রয়েছে। বর্তমানে দ্বিতীয় হুগলি সেতু দিয়ে প্রত্যহ ১ লক্ষেরও বেশি গাড়ি যাতায়াত করে। এছাড়াও, সরকারি-বেসরকারি বাসে পড়ুয়া থেকে শুরু করে নিত্যযাত্রীরা কলকাতা শহরে আসেন। এমন পরিস্থিতিতে ব্রিজে মেরামতির কাজ শুরু হলে এই ট্রাফিক কিভাবে কোন রাস্তা দিয়ে সচল করা হবে সেটাই এখন সবার কাছে বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি, এর ফলে যাত্রীদেরও যে দুর্ভোগ বাড়তে চলেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।