বাংলা হান্ট ডেস্ক : কিংবদন্তি কথাটা মৃণাল সেনের (Mrinal Sen) মতো পরিচালকের জন্য যথেষ্ট নয়। বিশেষত বাংলা সিনেমাকে তিনি যে জায়গায় পৌঁছে দিয়েছিলেন, তাতে আপামর বাঙালি জাতি তাকে সারাজীবন মনে রাখবে। তার চলচ্চিত্র নির্মাণের কোনো তুলনাই হয়না। ছবি পরিচালনার পাশাপাশি তিনি একাধিক রত্নখচিত অভিনেতা উপহার দিয়েছেন ইন্ডাস্ট্রিকে। মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty) তেমনই একজন। রবিবারের দুপুরে জীবনের প্রথম পরিচলককে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করার জন্য অভিনেতা পৌঁছে গেলেন স্কটিশ চার্চ কলেজে।
স্কটিশ চার্চ কলেজের কৃতি প্রাক্তনীদের তালিকাটা ছোট নয়। সেখানে পড়াশোনা করেছেন নেতাজী সুভাষ, বিবেকানন্দ, মান্না দের মতো বিখ্যাত ব্যক্তিরা। পরিচালক মৃণাল সেনও এই কলেজেরই ছাত্র এবং তার নিজের হাতে গড়ে তোলা মিঠুন চক্রবর্তীর পাঠ্যজীবন কেটেছে স্কটিশ চার্চেই। আর প্রাক্তন ছাত্রের জন্ম শতবর্ষ উদযাপন চলছে সেখানে। প্রাক্তনীদের উদ্যোগে “শতবর্ষে মৃণাল সেন” শীর্ষক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন মিঠুন চক্রবর্তী।
মিঠুন চক্রবর্তী সেখানে উপস্থিত হয়ে বলেন, ‘‘আজ দিনটা অন্যরকম। যার হাত ধরে ফিল্ম লাইনে আমার জন্ম তাঁর শতবর্ষ। আমার সাফল্যের পিছনে আছে ডেস্টিনি। আমিই ডেস্টিনির সেরা উদাহরণ। অন্ধগলি থেকে একটা ছেলে কীভাবে পৃথিবী বিখ্যাত হতে পারে? কলেজের ইলেকশনে বোমাবাজি হত। আমার নামে কেস হল। তারপর শুরু হল ডেস্টিনির খেলা। মৃণালদাও আমাকে সামনে থেকে দেখেননি। পেছন থেকে দেখেই নায়ক বেছেছিলেন। হিরো হওয়ার যা যা দরকার আমার কিচ্ছু ছিলনা।”
আরও পড়ুন : ‘স্যার, আপনার নেতৃত্বেই ভারত…’, নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশ্যে বিশেষ পোস্ট শাহরুখের
এমনকি তিনি যে ভিলেন হবেন সেকথাও তুলে ধরেন মহাগুরু। তার কথায়, “আমি ভেবেছিলাম ড্যান্সিং ভিলেন হব। মৃণালদার জন্য গোঁফ লাগিয়ে ভিলেন সেজে ছবি পাঠিয়েছিলাম। মৃণালদা ছবি ছিঁড়ে ফেলে দিয়ে বলেছিলেন আমি মৃগয়া করব। নায়ক খুঁজছি। আমি সবাইকে বলি স্বপ্নকে কখনও ঘুমোতে দেবেন না। কত স্মৃতি ঘুরছে।”
আরও পড়ুন : মাথাভর্তি সিঁদুর হাতে শাঁখা পলা, দেবের স্ত্রী রূপে অপরূপা সৌমিতৃষা! ‘প্রধান’ ছবির লুক দেখে মুগ্ধ ভক্তরা
আবার কলেজের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মিঠুন বলেন, ‘‘মাইতি স্যার বলতেন, তুমি আর ক্লাসে এসো না বাবা, তোমাকে আমি প্রেজেন্ট করে দেব। আমি বলতাম আমি না এলে আমার দিন খারাপ যাবে। স্যার বলতেন তুমি এলে আমার দু মাস খারাপ যাবে’’।
আরও পড়ুন : ‘বিয়ের বয়স চলে যাচ্ছে, মেয়ে দেখতে যাব …” ভাইরাল পুলিশের ছুটি চাওয়ার চিঠি
এদিন প্রাক্তণ সতীর্থদের সাথে আলাপচারিতা করতেও দেখা যায় মিঠুন চক্রবর্তীকে। কলেজের বান্ধবীরাও তাদের মেয়েবেলার মেগাস্টার বন্ধুকে পেয়ে ঘিরেধরেন। ফাঁস করেন কিছু অজানা গল্পও। একটা ভালো দিন কাটিয়ে সেখান থেকে ফেরেন মিঠুন। তবে যাওয়ার আগে জানিয়ে দিয়ে যান যে, যতই স্মৃতিময় হোক না কেন কলেজ লাইফে ফিরে যাওয়ার তাড়না নেই তার। তার কথায়, এখানেই তার ভিত তৈরি হয়েছে। আর তাই পিছনের দিকে নয়, সামনের দিকে এগিয়ে চলার পরিপন্থী তিনি। বাকিদেরও তাই উপদেশ দেন মিঠুন চক্রবর্তী ওরফে মহাগুরু।