বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সরকারি প্রকল্প নিয়ে বঞ্চনার অভিযোগে সরব রাজ্য। অথচ এবার পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) বিরুদ্ধেই উঠল গুরুতর বঞ্চনার অভিযোগ। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীদের বকেয়া টাকা মেটানো হচ্ছে না বহুদিন। এইভাবেই দিনের পর দিন বঞ্চনার শিকার কলকাতা পৌরসভার অবসরপ্রাপ্ত পুরো কর্মীরা (Kolkata Municipal Corporation)। অভিযোগ রাজ্যের কোষাগারও প্রায় শূন্য। এই অবস্থায় অবসরপ্রাপ্ত পুরো কর্মীদের পেনশনের টাকা দিতে হিমশিম খাচ্ছে রাজ্য সরকার।
অবসরকালীন মোটা টাকা পাচ্ছেন না পুর কর্মীরা (Kolkata Municipal Corporation)
অভিযোগ চলতি বছরে কলকাতা পৌরসভা (Kolkata Municipal Corporation) থেকে অবসর নিয়েছেন এমন অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের মধ্যে মাত্র ৬০ শতাংশ কর্মী পেনশনের পাশাপাশি গ্র্যাচুইটি এবং কমিউটেশন (পেনশনের একাংশের বদলে এককালীন থোক টাকা) পেয়েছিলেন গত জানুয়ারিতে। কিন্তু বাকি চল্লিশ শতাংশ কর্মী এবং যারা চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত অবসর নিয়েছেন তারা সকলেই ওই টাকা থেকে বঞ্চিত।
অন্যদিকে এবছর পুরসভার (Kolkata Municipal Corporation) কোষাগারের অবস্থাও শোচনীয়। এই অবস্থায় অবসরপ্রাপ্ত বিপুল সংখ্যক কর্মীদের গ্র্যাচুইটি ও কমিউটেশনের টাকা কিভাবে পরিশোধ করা হবে তা নিয়েই তৈরি হয়েছে বিরাট সংশয়। এমনকি পুরো কর্মীদের বেতন দেওয়া নিয়েও তৈরি হয়েছে সমস্যা। এপ্রসঙ্গে পুরসভার এক কর্তা আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, ‘ধাপে ধাপে অবসরকালীন টাকা মিটিয়ে দেওয়া হবে। চিন্তার কিছু নেই।’
পুরসভার (Kolkata Municipal Corporation) অন্দরের খবর ২০২৪ সালে অবসর নেওয়া কর্মীদের পেনশনের টাকা মেটাতে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা প্রয়োজন। শুধু তাই নয় গত দুবছর ধরে ঠিকাদারদেরও পুরসভা থেকে পাওনা রয়েছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এ বছর পুরসভার রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ অন্যান্য বারের তুলনায় অনেকটাই কম। তাই বাড়ছে চিন্তা।
অন্যদিকে একাধিক বিভাগের সম্পত্তিকর-সহ বিভিন্ন কর আদায়ের পরিমাণ-ও অনেক কমে গিয়েছে। পরিসংখানের হিসেবে গত বছরের পয়লা এপ্রিল থেকে ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে রাজস্ব আদায়ের তুলনায় চলতি বছরে ওই একই সময়ে রাজস্ব আদায় কমেছে প্রায় ৭ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা। তাই ভাঁড়ারের অবস্থা শোচনীয় হওয়ায় ভবিষ্যতে পুরকর্মীদের বেতনের কথা ভেবে উদ্বিগ্ন রয়েছেন পুর অর্থ দফতরের আধিকারিকরা।
আরও পড়ুন: চিকিৎসক নিয়ে মন্তব্য! ‘সত্যি’ বলে বিরোধীদের কটাক্ষের মুখে তৃণমূলনেত্রী রচনা
কিভাবে তৈরি হলো এমন পরিস্থিতি?
এ প্রসঙ্গে পুরো আধিকারিকদের একাংশের পর্যবেক্ষণ ইদানিং আয়ের তুলনায় ব্যয়ের পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। জানা যাচ্ছে, গত কয়েক বছরে ঘাটতি বাজেটের পরিমাণ ছাড়িয়ে গিয়েছে ২ হাজার কোটি টাকা। গত দু’তিন বছর ধরে পুরসভার অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা তাঁদের প্রাপ্য টাকা (গ্র্যাচুইটি ও
কমিউটেশন) নিয়মিত পাচ্ছেন না। মাঝে এই বকেয়া টাকার পরিমাণ কিছুটা কমানো গেলেও আবার সেই একই অবস্থা তৈরী হয়েছে।
অন্যদিকে পুরো কর্মীদের বকেয়া পাওনা মেটানোর দাবিতে একাধিকবার আন্দোলনে নেমেছেন বিরোধী কর্মী সংগঠন। দিনের পর দিন পুরো কর্মীরা তাদের প্রাপ্য টাকা না পাওয়ায় বিজেপির পুরো প্রতিনিধি সজল ঘোষ ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেছেন, ‘পুজোর সময় সরকার ক্লাবগুলিকে মোটা টাকা দিতে পারছে। কিন্তু অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীদের তাদের প্রাপ্য টাকা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। বর্তমান সরকার উৎসব,দান-খয়রাতিতে মেতে উঠেছেন। ফলে খেটে খাওয়া সরকারি কর্মচারীরা, তাদের প্রাপ্য টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’