বাংলা হান্ট ডেস্কঃ তদন্ত যত এগোচ্ছে সন্দেশখালি (Sandeshkhali) কাণ্ডে পেঁয়াজের খোসার মতো বিস্ফোরক সব তথ্য সামনে আসছে। গত ৫ জানুয়ারি ইডির ওপর হামলার ঘটনায় আগেই গ্রেফতার হয়েছে শাহজাহান শেখ (Sheikh Shahjahan)। সম্প্রতি গ্রেফতার হয়েছে শাহজাহানের ভাই আলমগীরেরও। আর দাদা-ভাইয়ের এই জুটির বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি অভিযোগ!
সূত্রের খবর, তোলাবাজি থেকে অত্যাচার, শাহজাহান এবং আলমগীরের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই! জানা যাচ্ছে, শুধুমাত্র তোলাবাজি থেকে মাসে লক্ষাধিক টাকা আয় করতেন আলমগীর! সেই টাকা দিয়ে সন্দেশখালি এলাকায় প্রায় ১০০ বিঘা জমি কিনেছিলেন তিনি! সেই সঙ্গেই নানান ব্যবসাতেও খাটছে তাঁর টাকা! সিবিআই তদন্তে এমনই তথ্য উঠে এসেছে বলে খবর। এই বিপুল পরিমাণ নগদের উৎস কী? তা এবার খতিয়ে দেখবে ইডি (ED)।
ইতিমধ্যেই এই সকল জমির কাগজপত্র তদন্তকারীদের হাতে এসেছে বলে খবর। সেই সঙ্গেই শাহজাহান এবং তাঁর ভাইয়ের কললিস্ট ঘেঁটে জানা গিয়েছে বসিরহাট জেলা পুলিশের একাধিক আধিকারিকের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা হতো তাঁদের। জানা যাচ্ছে, সন্দেশখালি, মিনাখাঁ, ন্যাজাট থাকার একাধিক অফিসারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন দুই ভাই। পুলিশ কর্মীদের একটি বৃহৎ অংশ তাঁদের আজ্ঞা পালন করতেন বলে খবর।
সন্দেশখালি কাণ্ডে ধৃত আলমগীর (Sheikh Alamgir), সিরাজুল এবং মাফুজাকে বসিরহাট আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁদের ৫ দিনের সিবিআই (CBI) হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তদন্তের পর সিবিআই জানতে পেরেছে, এলাকায় রীতিমতো দাপটের পরিবেশ তৈরি করেছিলেন শাহজাহান এবং আলমগীর। অটো, বাস থেকে শুরু করে লরি, এলাকায় যে কোনও যানবাহন চলাচলের জন্য তাঁদের ‘ট্যাক্স’ দিতে হতো। অটোর ক্ষেত্রে সেই অঙ্কটা ছিল মাসিক ৪০০০-৫০০০ টাকা। অপরদিকে বাস কিংবা লরি হলে মাস গেলে গুনতে হতো ১২০০০-১৫০০০ টাকা। আলমগীরের ‘খাস’ মিজানের কাছে এই টাকা জমা করা হতো বলে খবর।
আরও পড়ুন: ‘ভেবেছিলাম এবার ভোটে দাঁড়াব না, কিন্তু…’, ভোট প্রচারে বেরিয়ে একি বললেন দেব!
এভাবে তোলাবাজি করে মাস গেলে লক্ষাধিক টাকা আয় করতেন শাহজাহানের ভাই। ধামাখালি বাসে পিনকিকের জন্য কেউ বাস, লরি কিংবা গাড়ি রাখলেও কয়েক হাজার টাকা নিতেন আলমগীররা। এমনকি কেউ যদি ভেসেল অথবা বোট বুক করে সুন্দরবন এবং ইছামতীতে ঘুরতে যান তাহলেও টাকা দিতে হতো। তোলাবাজির এই টাকা দিয়েই সন্দেশখালিতে বিঘা-বিঘা জমি কেনেন তাঁরা। অনেক সময় জমি কেনার পর নামমাত্র টাকা ঠেকিয়ে দিতেন আলমগীররা। এভাবেই সন্দেশখালির বুকে একাধিক হোটেল, গেস্ট হাউসের মালিক হয়ে ওঠেন তাঁরা।
এখানেই শেষ নয়, জানা যাচ্ছে, ৫ জানুয়ারি ইডি পেটানোর ঘটনায় পুলিশের হাতে ধৃত ৭ জন ব্যক্তি হয়তো নিরপরাধ! তাঁদের জেরা করে এবং তাঁদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সিবিআইয়ের হাতে এমন তথ্যই উঠে এসেছে বলে খবর। তাহলে কি পুলিশের এই গ্রেফতারির পিছনে রয়েছে অন্য গল্প? উত্তর খুঁজতে সন্দেশখালি, মিনাখাঁ থানার তদন্তকারী অফিসারদের ডেকে পাঠানোর তোরজোড় শুরু হয়েছে বলে খবর। ইতিমধ্যেই সন্দেশখালি কাণ্ডে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে সিবিআইয়ের হাতে। এবার তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের ডাকা হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে।
‘ভারত আজ পর্যন্ত অলিম্পিকে সোনা পায়নি …’ ভরা মঞ্চে বেফাঁস মমতা