বাংলাহান্ট ডেস্ক : জিলিপি। একটা জিভে জল আনা খাবার। আড়াই পাচের এই রসালো মুচমুচে মিষ্টিটাকে পছন্দ করেননা এমন মানুষ বোধহয় ভূ ভারতে বিরল। বাংলায় আজও বহু মানুষের প্রাতরাশের তালিকাতেই থাকে গরম কচুরি আর জিলিপি। আবার, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন মেলার এক অপরিহার্য অঙ্গ এই জিলিপি।
তবে পশ্চিমবঙ্গতে জিলিপির রমরমা চললেও ভারতের নানাপ্রান্তে ‘জলেবি’ অর্থাৎ বাংলার এই জিলিপির চাহিদা কিন্তু তুঙ্গে। বহু বছর আগে প্রথম বানানো হয়েছিল এই মিষ্টি। তবে কোথায় এই মিষ্টি প্রথম তৈরী করা হয়েছিল সেই বিষয়ে বিস্তর মতান্তর থাকলেও বিভিন্ন তথ্যসূত্র অনুযায়ী জানা যায়, প্রায় প্রথম জিলিপির আবিষ্কার হয়েছিল আজ থেকে ৬০০ বছর আগে। আবার, ‘অক্সফোর্ড কম্পানিয়ন টু ফুড’ বইতে লেখা রয়েছে এই মিষ্টির কথা। ত্রয়োদশ শতাব্দীতে মোহাম্মদ বিন হাসান আল বাগদাদি রচিত এক বইয়ে জিলিপির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
আবার, মধ্যপ্রাচ্যের খাদ্যবিষয়ক গবেষক ক্লডিয়া রডেনের দাবি, ত্রয়োদশ শতাব্দীর পূর্বেই হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে মিশরের ইহুদিরা ‘জালাবিয়া’ নামক এক মিষ্টি প্রস্তুত করতেন। এই জালাবিয়াই কালক্রমে বর্তমান জিলিপির রূপ নেয় বলেও জানা গিয়েছে। ১৪০০-১৫০০ খ্রিস্টাব্দে ভারতে জিলিপির প্রচলন ছিল যার নাম ছিল ‘কুণ্ডলিকা’ বা ‘জলবল্লিকা’। আবার, গবেষকদের একাংশের মতে, মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে ‘জাহাঙ্গিরা’ ওরফে প্রথম জিলিপি প্রস্তুত করা হয়। তবে এই মিষ্টি পশ্চিম এশিয়া থেকে এই দেশে এলেও বর্তমানে ভারতেও জনপ্রিয়তা খুব বেশি।
জিলিপি সাধারণত তৈরী করা হয় ময়দা ও চালের গুঁড়োর মিশ্রণ দিয়ে। আড়াই প্যাঁচ দিয়ে তেলে ভেজে চিনির রসে ডুবিয়ে রাখলেই তৈরী হয় জিলিপির আকার আর স্বাদ। জিলিপির এই ঘোরালো প্যাঁচ এমনই আলোচনার বিষয়বস্তু যে এর সঙ্গে জটিল মানুষের মানসিকতার তুলনা করা হয়।
জিলিপির এমন আকৃতির কী কারণ সেই সম্পর্কে স্পষ্টভাবে কিছুই জানা না গেলেও বিভিন্ন তথ্যসূত্র অনুসারে, বিশেষভাবে পরিচিত করে তোলার জন্যই জিলিপি এমন প্যাঁচ দিয়ে বানানো শুরু হয়েছিল। আবার অনেকের মতে, লম্বা করলে জায়গা বেশি লাগবে বা ভেঙে যাওয়ার সম্ভবনা এড়াতেই জিলিপি এমন গোল প্যাঁচ দিয়ে প্রস্তুত করা হয়ে থাকে।